Logo

অপরাধ    >>   রেনু হত্যা মামলায় ১ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ঘোষণা

রেনু হত্যা মামলায় ১ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ঘোষণা

রেনু হত্যা মামলায় ১ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ঘোষণা

রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় তাসলিমা বেগম ওরফে রেনুকে হত্যার দায়ে আদালত এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং চার আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। বুধবার (৯ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ মোরশেদ আলম এই রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম হৃদয় ইসলাম মোল্লা, যিনি ইব্রাহীম ও নয়ন মোল্লা নামেও পরিচিত। তিনি আগেই কারাগারে ছিলেন এবং আজ রায় ঘোষণা উপলক্ষে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত চারজন হলেন আবুল কালাম আজাদ, কামাল হোসেন, রিয়া বেগম এবং আসাদুল ইসলাম। তারা জামিনে ছিলেন, তবে রায় ঘোষণার পর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার নথিপত্র অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ২০ জুলাই, রেনু একটি স্কুলে তার চার বছরের মেয়েকে ভর্তি করানোর জন্য যান। সেখানে উপস্থিত কয়েকজন নারী তাকে 'ছেলেধরা' সন্দেহ করেন এবং এটি দ্রুত গুজবে পরিণত হয়। এক পর্যায়ে আশপাশের শতাধিক মানুষ স্কুল প্রাঙ্গণে এসে তাকে মারধর শুরু করে। তাকে রক্ষা করতে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে নেওয়া হলেও, সেখানে উপস্থিত জনতা তাকে ধরে নিচে নামিয়ে পেটাতে শুরু করে। প্রায় আধা ঘণ্টা নির্যাতনের পর রেনু মৃত্যুবরণ করেন।

মামলার তদন্তে ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়, যেখানে হৃদয় ইসলাম প্রধান আসামি হিসেবে চিহ্নিত হন। মামলায় তিনজন আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালতের রায়ে ৮ আসামিকে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস দেওয়া হয়েছে।

নিহত রেণু ইডেন কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন এবং সরকারি তিতুমীর কলেজে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর করেছিলেন। তাঁর মৃত্যু বিষয়ক এই রায় সমাজে গণপিটুনি এবং অপরাধের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী বার্তা হিসেবে গণ্য হচ্ছে।

এছাড়া, দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে দেয় যে, সমাজে গণপিটুনির বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি।